Editorial & Contact Us

কেন ব্লগ, থাকবেই বা কী

বেশ তো ছিল ইউটিউব চ্যানেল, আবার ব্লগ-টগ কী দরকার!

এমন কথা যে শুনছি না, তা নয়। আসলে হাতের তালু যেমন, তেমনই তো ‘গ্রাস’ তুলতে হয়, নাকি?

আগ বাড়িয়ে এও বলছেন কেউ, অনেকটা সেই ‘খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে...’ কেস না হয়ে যায়!

সত্যি বলতে কী, ‘তালু’র মাপ বুঝে চলার পক্ষে আমরা যথেষ্টই আড়াকাঠির মতো ট্যারা। ঢ্যাঁটা। এক বগ্গা। গোঁয়াড়।

আর তাঁতি হয়েও তাঁত কেনার আগেই, ‘এঁড়ে বাছুর’টি আমরা কিনে ফেলেছি! তার খাই-খরচা, তাকে বড় করে তুলে ফলদায়ী করা যে ঝক্কির, অতশত-র তোয়াক্কা না করেই। ফলে যা হয়। হেঁশেল গরিবি হলে, ঠেলতে তো ঠ্যালা বুঝতেই হবে।

ইউটিউব-এর নানান প্রোডাক্ট তৈরি করতে গিয়ে কমবেশি এমন একটা অভিজ্ঞতা যে হয়নি, তা নয়। সঙ্গে কিছু দয়াবান, গুণবান আছেন-টাছেন, তাই কিছুটা রক্ষে!

কিন্তু এমন কিছু একটা উপায় আমরা ভাবতে চাইছিলাম, যেখানে হেঁশেলও কষ্টেসিষ্টে জারি থাকে, আবার পাকশালার আয়তনটাও একটু বড়-টড় হয়।

এই ভাবনা থেকেই খানিকটা পিছু হেঁটে নতুন করে চিন্তার শুরু। এবং ‘অলটারনেটিভ বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এ ব্লগ-এর জন্ম দেওয়া।

নিজেই নিজেদের প্রশ্ন করলাম, আমরা চাইছিটা কী?

একটা ডিজিটাল আর্কাইভ, তাই তো! উত্তর, হ্যাঁ। যেখানে বাঙালির ঐতিহ্য, পরম্পরা নিয়ে যেমন মানুষজনের কথা থাকবে, তেমনই থাকবে ঘটনার ঘনঘটা। তা সে শিল্প, সাহিত্য থেকে শখ-আহ্লাদ তো বটেই, এমনকী জীবনের অতি দরকারি ব্যাপারস্যাপারও।

সোজা কথায়, একটা জাতির স্বভাব-অভাব-প্রেম-অপ্রেম থেকে তার বেড়ে ওঠাকে বুঝতে গেলে যে যে ধরনের ‘রেফারেন্স র‍্যাক’ থাকা জরুরি, তার প্রায় সবটা নিয়েই একটা সংরক্ষণ গড়ে তোলা। যেখান থেকে দরকার মতো, কেউ তার কাজেকম্মে তথ্যের সাহায্য নিতে পারে।

তো, তারই একটা কাজ করার চেষ্টা আমরা চালাচ্ছি।

ব্যাপার হল, এ এক এমন জাতি যে, তেমন মানুষেরও শেষ নেই, অন্ত নেই তেমন ঘটনাপ্রবাহেরও।

কাজে নামার আগেই বুঝেছিলাম, বলতে গেলে, এ এক মহাযজ্ঞ, কারও একার পক্ষে যা সম্ভব নয়। এমনকী এক জীবনেও সামলে ওঠা মুশকিল।

তো, তা’হলে উপায়?

উপায় একটাই, কেমন ধারায়, কী পদ্ধতিতে এই আর্কাইভ বা সংরক্ষণশালাটি গড়া যেতে পারে, কাজ করতে করতে তার একটা ‘মডেল’ খাড়া করাযাতে, পরে পশ্চাতে সেই ধারা, বা তার চেয়ে উন্নত কোনও মডেল-এ কাজ চলতে পারে। জাতির রেফারেন্স র‍্যাকটিও ধীরে ধীরে পাকাপোক্ত হয়।

আপাতত, ইউটিউব তিনটে ধারায় কাজ চলছে। এক, শুধুই ভিডিয়ো ফরম্যাটে। দুই, ভিডিয়োর সঙ্গে অডিয়ো মিলিয়ে। তিন, শুধুই অডিয়ো-য়।

এই তিন ধারায় কাজ করতে গিয়ে এই ক’টা মাসে আমরা যেমন একটুআধটু প্রশংসা পাচ্ছি, তেমন বেশ বুঝতে পারছি, মন যতটা চাইছে, সময় এবং পকেট ততটা সায় দিচ্ছে না।

অথচ, মডেলের কাজটিকে অন্তত দ্রুত খাড়া করতে গেলে, এমন কোনও উপায়ে যেতে হবে, যেখানে অন্তত ভাবনা বা পরিকল্পনার ব্যাপারটিতে একটু গতি আনা যায়। আমাদের যাঁরা লক্ষ করছেন সাগ্রহে, তাঁদের কিছুটা হলেও একটা স্বচ্ছ জমিতে দাঁড় করিয়ে বোঝানো যায়, ঠিক কী কী আমরা চাইছি, কী ভাবে চাইছি, কেন চাইছি ইত্যাদি ইত্যাদি।

এই ব্লগ হল, সেই স্বচ্ছ জমিটা তৈরি করতে চাওয়ার প্রথম ধাপ।

এখানে বলে নেওয়া ভাল, এই প্রথম ধাপে পৌঁছনোও অত সহজ ছিল না, যদি না ‘অলটারনেটিভ বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এর সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্যটি মাউস বাগিয়ে ভরসা দিত! ওর ব্যাপারটা ছিল অনেকটা আমির খা‌নের ‘লগন’-এর মতো। ‘খেলা’ না জেনেও, হাল না ছেড়ে, শিখেটিখে, যে করে হোক ম্যাচ বার করা!

এবিসি-র সব সদস্য তাই আবার করে তার সবচেয়ে খুদে এবং অসম্ভব কৃতী সদস্য প্রীতম পালকে অনেক অনেক ‘ব্লগ’-বাস্টার আদর জানাচ্ছে!

এবার বলি, এই ব্লগটিতে কী ধরনের লেখা থাকবে? নো ‘রাজনীতি’নো ‘ব্রণ, ফুসকুড়ি’, নো ‘হাইহুই-ওয়াও-ও’

বদলে, এখানে যা যা লেখা থাকবে, প্রায় সবই আমাদের করতে চাওয়া কাজের ধারার সঙ্গে মিলতে মিলতে যাবে। তবে অবশ্যই ‘ব্লগ’ ফরম্যাটটির জন্যই সেখানে লেখালেখিতে শব্দসংখ্যা হবে কম। পরিমিত তার বিস্তারে যাওয়ার পথও। কিন্তু তার জন্য তো আমাদের ইউটিউব শাখা রইল।

ফলে আজ থেকে, বলতে পারেন ‘অলটার‌নেটিভ বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এ একটা নয়, দু’টি শাখা, একে অপরকে তাল দিতে দিতে এগোবে। ব্লগে নিয়মিত লেখার সংখ্যা বাড়বে। সেই সেই লেখায় চোখ রাখলেই বুঝবেন, আগামী দিনে ঠিক কোনদিকে যেতে চলেছে ‘অলটারনেটিভ বেঙ্গল চ্যাপ্টার’

আপাতত, আমার কথাটি ফুরোলো। তবে নটে গাছটি মুড়োয়নি তো বটেই। সবে জন্ম দিল আর একটি শাখা।

যে শাখা না হয়, আপনাদের ভরসার হাত পেয়ে বেঁচেবর্তে আরও নতুন কিছুর জন্ম দিক, এই আশা তো করতেই পারি নাকি?

‘আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি’...


Alternative Bengal Chapter
Ashoke Swapno, 1st Floor
122/4, Jiban Ratan Dhar Road
Dumdum
Kolkata- 700028



mail: altbengalchapter@gmail.com
web: alternativebengalchapter.blogspot.com
cell:  
9830440151 (joydeep sen
), 9830897915 (ranajit dutta)