দূর্গতিহারিণী - ১২০০ শব্দে হোমারের ইলিয়াড - কৌশিক দাশগুপ্ত



১২০০ শব্দে হোমারের ইলিয়াড

কৌশিক দাশগুপ্ত
শিক্ষক, লেখক, অনুবাদক
ন’বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। নাছোড় মরণপণ যুদ্ধ। যুদ্ধ চলছে ট্রোজান এবং গ্রিকদের মধ্যে। যুদ্ধের কারণ ট্রয়ের কনিষ্ঠ রাজপুত্র প্যারিস মাইসিনির রাজা মেনেলাউসের স্ত্রী হেলেনকে অপহরণ করে নিয়ে এসেছেন ট্রয়ে। অসামান্য সুন্দরী হেলেন যখন মেনেলাউসকে বিবাহ করেন তখন হেলেনের পাণিপ্রার্থী গ্রিক রাজন্যবর্গ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন হেলেনের সম্মানহানি হলে তাঁরা একযোগে তাঁর সম্মান পুনরুদ্ধার করবেন। সেই সম্মান রক্ষার্থে তাঁরা সমবেত হয়ে ট্রয় নগরী আক্রমণ করেছে। নগরীর অধিবাসী ট্রোজানরা অবরুদ্ধ। আক্রমণকারী গ্রিকরা সদ্য সদ্য ট্রয়ের সাথে জোটবদ্ধ কাছাকাছি একটি শহরকে ধ্বংস করেছে, লুঠ করেছে সুন্দরী নারীদের, লুঠ করেছে অগাধ ধন-সম্পদ। ক্রাইসেস, তছনছ হয়ে যাওয়া শহরের অ্যাপোলো মন্দিরের পুরোহিত, এসেছেন গ্রিক শিবিরে। এসেছেন গ্রিক নেতা আগামেমননের কাছে কাতর আর্জি নিয়ে— তিনি যেন তার বন্দিনী কন্যাকে দাসত্ব বন্ধন থেকে মুক্তি দেন। পত্রপাঠ নাকচ হল অসহায় পিতার আবেদন। ক্রাইসেস অ্যাপোলোর কাছে প্রার্থনা করলেন তিনি যেন গ্রিকদের কঠোর শাস্তি দেন। সাড়া দিলেন অ্যাপোলো। এক ভয়ানক মহামারী তার বিশাল কালো ডানায় ঢেকে ফেলল গ্রিক শিবিরগুলিকে। এ ভাবেই শুরু হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য ইলিয়াড। সেই কালান্তক মারী রাক্ষুসে খিদে নিয়ে গিলতে লাগল অগণিত গ্রিক সৈন্যদের। এই অভাবনীয় দুর্বিপাকের কারণ খুঁজতে ব্যাগ্র, মরীয়া গ্রিকরা। গণৎকার ক্যালচাসের কাছে ব্যাকুল কন্ঠে জানতে চাইলেন, এই মহামারীর কারণ। ক্যালচাস আগামেমননকে নির্দেশ দিলেন, ‘‘বন্দিনী মেয়েটিকে ফিরিয়ে দাও তার পিতার কাছে। কুপিত অ্যাপোলো এ কারণেই আমাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করছেন।’’ আগামেমনন নিমরাজি। বললেন, ‘‘ফিরিয়ে দিতে পারি, কিন্তু বিনিময়ে ব্রিসিসকে আমার চাই। ট্রোজান বন্দিনী কন্যা ব্রিসিস, গ্রিক সেনানায়ক অ্যাকিলিসের ক্রীতদাসী। গ্রিক বাহিনীর নেতা অ্যাগামেমননের এই অন্যায় দাবিতে ক্ষিপ্ত, বিতৃষ্ণ অ্যাকিলিস শিবিরে ফিরে ঘোষণা করলেন, অ্যাগামেমননের নেতৃত্বে আমি আর যুদ্ধ করবো না।’’ অপমানের বদলা নেওয়ার জন্য। তিনি তাঁর মাকে বললেন, ‘‘আমি চাই এই গোটা গ্রিক বাহিনী ধ্বংস হোক। তুমি যেভাবে পারো দেবরাজ জিউসকে রাজি করাও।’’ জলদেবী থেটিসের একদা প্রণয় প্রার্থী ছিলেন জিউস। তাঁর অনুরোধ তিনি ফেরাতে পারলেন না। সে সময় গ্রিক এবং ট্রোজানদের মধ্যে চলছিল যুদ্ধবিরতি। যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে ট্রোজানরা আক্রমণ করল। জিউস তাদের দিকে বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত। জিউস সাহায্য করছেন ট্রোজানদের। অ্যাকিলিস মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে। একের পর এক ক্ষয়ক্ষতির ঢেউ আছড়ে পড়ছে গ্রিক শিবির-এ। ট্রয়রাজ প্রিয়ামের কনিষ্ঠপুত্র প্যারিস এবং আগামেমননের ভাই মেনেলাউস স্থির করলেন একে অপরের সাথে সংঘর্ষে অবতীর্ণ হয় এই রক্তস্রাবী যুদ্ধের নিষ্পত্তি ঘটাবেন। মেনেলাউস জয়ী হলেন, কিন্তু ট্রোজানরা চুক্তি ভঙ্গ করল। দুই বাহিনী দু’টি লোলুপ আগ্রাসী জোয়ারের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল পরস্পরের দিকে। ধুলোয় আকাশ ঢেকে গেল, অস্ত্রের ঝনঝনানি, অশ্বের হ্রেষাধ্বনি, বিজয়ীর আস্ফালন আর বিজিতের আর্তনাদে আবার ডুবে গেল ইজিয়ান সমুদ্রের কল্লোল। যুদ্ধে বহু যোদ্ধা তাদের বীরত্ব ও যুদ্ধনৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখলেন। এদের মধ্যে অগ্রগণ্য গ্রিক শিবিরের ডায়োমিডিস এবং প্রিয়াম-পুত্র হেক্টর। যুদ্ধের গতিপথ বারংবার বাঁক নিলো, বিপুল জলরাশির মত গ্রিক বাহিনী বারবার ঝাঁপিয়ে পড়লো, কিন্তু ট্রোজান বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে প্রতিহত হয়ে তারা পিছু হটল। তাদের জাহাজগুলির প্রতিরক্ষার জন্য যে প্রাচীর তারা তৈরি করেছিল আশ্রয় নিল তার আড়ালে। এর মাঝেই দেবতাদের মধ্যেও চলছিল এক সমান্তরাল লড়াই তাদের অনুগত গ্রিক এবং ট্রোজানদের হয়ে। অ্যাথেনা, হেরা এবং পোসাইডন গ্রিকদের পক্ষে ছিলেন অন্যদিকে অ্যাপোলো আফ্রোডাইট এবং আরিস ট্রোজানদের সমর্থন করেছিলেন। যুদ্ধের আগুন উলসে উঠছিল, দেবতারা সাহস সঞ্চার করছিলেন তাদের ভক্ত যোদ্ধাদের হৃদয়ে, নতুন শক্তি সঞ্চারিত করছিলেন তাদের রণ-ক্লান্ত বাহুতে।
হেক্টরের মৃতদেহের পাশে শোকাচ্ছন্ন স্ত্রী ও পুত্র
দুই মুখোমুখি জোয়ারই সমান শক্তিশালী। ঘাম আর রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধের ফয়সলা দূর অস্ত। অথচ ফয়সলা চাই। থেটিসের কাছে করা তার প্রতিজ্ঞা জিউসকে পালন করতেই হবে। বীরশ্রেষ্ঠের সিংহাসনে আবার অভিষিক্ত করতে হবে অ্যাকিলিসকে। তাই জিউস ঘোষণা করলেন তিনি ছাড়া অন্য কোনও দেবতা যুদ্ধের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। যুদ্ধের হাল ধরলেন জিউস। যুদ্ধ তরী ভেসে চলল দেবরাজের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের দিকে। প্রবল চাপের মুখে, বয়োবৃদ্ধ গ্রিক সেনানায়ক নেস্টর প্রস্তাব করলেন, ‘‘অ্যাকিলিসের কাছে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হোক। তারা তাকে যুদ্ধে যোগ দিতে রাজি করাবেন।’’ অ্যাকিলিস শুনলেন তাদের কাতর মিনতি, কিন্তু যুদ্ধে যোগ দিতে রাজি হলেন না। বললেন, ‘‘যতক্ষণ না ট্রোজানরা আমার জাহাজ আক্রমণ করছে, ততক্ষণ অবধি এই যুদ্ধের সাথে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ বহুদিনের মরীয়া প্রয়াসের পর একদিন ট্রোজান বাহিনী গ্রিক প্রাচীর ভেদ করে ঢুকে পড়ল। ধেয়ে এল গ্রিক শিবিরের সীমানা অবধি, আগুন লাগিয়ে দিলো তাদের একটি জাহাজে। পরাজয় অবশ্যম্ভাবী, কারণ রণতরী ছাড়া গ্রিক বাহিনী ট্রয়ে আটকে পড়বে এবং নিশ্চিত ভাবেই ধ্বংস হবে। প্যাট্রোক্লাস। অ্যাকিলিসের প্রাণপ্রিয় বন্ধু। ছুটে গেলেন অ্যাকিলিসের কাছে। বললেন, ‘‘এই নরমেধ, এই শোচনীয় পরাজয়, এই সামুহিক ধ্বংস তো চোখে দেখা যায় না আর। তুমি আমায় অনুমতি দাও রণভূমিতে আমি তোমার জায়গায় তোমার ছদ্মবেশে অবতীর্ণ হব। সৈন্যরা উজ্জীবিত হবে, আমরা যুদ্ধে জিতব।’’ অ্যাকিলিস প্রাণাধিক বন্ধুর সম্ভাব্য পরিণতির কথা ভেবে দ্বিধান্বিত, শঙ্কিত। অন্যদিকে গ্রিক বাহিনীর পরিণতি নির্ভর করছে তার সিদ্ধান্তের উপর। অ্যাকিলিস অবশেষে রাজি হলেন। অ্যাকিলিসের বর্ম এবং শিরস্ত্রাণে সজ্জিত হয়ে অ্যাকিলিসের বাহিনীর পুরো ভাগে দেখা গেল প্যাট্রোক্লাসকে। অ্যাকিলিসের হঠাৎ আবির্ভাবে ট্রোজান সেনারা বিভ্রান্ত, ভীত। অসাধারণ প্যাট্রোক্লাসের যুদ্ধ নৈপুণ্য। হটে গেল গ্রিক জাহাজগুলি আক্রমণরত ট্রোজান সৈনিকেরা। কিন্তু তারপরই প্যাট্রোক্লাস করে বসলেন মারাত্মক এক ভুল। অ্যাকিলিস প্যাট্রোক্লাসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘‘ট্রোজান বাহিনীকে প্রতিহত করে তৎক্ষণাৎ তুমি ফিরে আসবে গ্রিক শিবিরে।’’ যুদ্ধ গৌরব অর্জন উন্মুখ প্যাট্রোক্লাস সে নিষেধ অমান্য করে ট্রোজানদের তাড়া করে নিয়ে গেলেন ট্রয়ের প্রবেশদ্বার অবধি। যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর জিউস অ্যাপোলোকে অনুমতি দিলেন প্যাট্রোক্লাসকে বর্মচ্যুত করে তাকে মাটিতে ফেলে দিতে। ভূলুণ্ঠিত প্যাট্রোক্লাসকে হত্যা করল প্রিয়ামের জ্যেষ্ঠপুত্র হেক্টর।প্যাট্রোক্লাসের মৃতদেহ এবং বর্মের দখলদারি নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে গেল। হেক্টর প্যাট্রোক্লাসের শরীর থেকে অ্যাকিলিসের বর্ম খুলে নিতে পারলেও মেনেলাউস এবং অন্যান্যরা প্যাট্রোক্লাসের মৃতদেহ ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হল। হেক্টরের হাতে প্যাট্রোক্লাসের নিদারুণ মৃত্যু সংবাদ পৌঁছল অ্যাকিলিসের কানে। সুগভীর বিষাদের ঘন কালো মেঘে বজ্র সঞ্চার হল। প্রতিহিংসার দাবানল জ্বলছে অ্যাকিলিসের বুকে। অ্যাগামেমননের সাথে সন্ধি করে অ্যাকিলিস জানালেন তিনি রণাঙ্গনে নামবেন। অ্যাকিলিসের মা জলদেবী থেটিস দেবতাদের অস্ত্র নির্মাতা হেফিস্টাস এর কাছে গেলেন। অ্যাকিলিস এর জন্য হেফিস্টাস তৈরি করলেন এক দুর্ভেদ্য বর্ম এবং অনিন্দ্য সুন্দর একটি ঢাল। ইতমধ্যে, অ্যাকিলিস যুদ্ধে যোগদান করবে না এটা ধরে নিয়ে হেক্টর তাঁর বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রয় প্রাচীরের বাইরে তাদের শিবির স্থাপন করতে। পরদিন বর্ম শিরস্ত্রাণে আবৃত অ্যাকিলিস যুদ্ধক্ষেত্রে সংহার মূর্তি ধারণ করলেন। ট্রয়ের রণভূমিতে কচুকাটা হতে লাগল ট্রোজান সৈন্যরা। ভয়ার্ত ট্রোজানরা অ্যাকিলিসের ভয়ঙ্কর ক্রোধের আগুন থেকে বাঁচতে প্রাচীর ঘেরা ট্রয় নগরীর ভেতরে আশ্রয় নিল।অ্যাকিলিসের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রস্তুত এবং উন্মুখ হেক্টর একা রইলেন প্রাচীরের বাইরে। অ্যাকিলিস তাঁর দিকে অগ্রসর হলেন। তাঁর সেই কালান্তক মূর্তি দেখে ভয়ে হেক্টরের প্রাণ উড়ে গেল। তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। তাড়া করলেন অ্যাকিলিস। দুর্গনগরী ট্রয়ের প্রাচীর চারবার প্রদক্ষিণ করার পর অবশেষে হেক্টর ঘুরে দাঁড়ালেন। মুখোমুখি হলেন অ্যাকিলিসের। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া হেক্টর লড়াই করলেন বীরের মতো। কিন্তু প্রতিহিংসার উত্তাপে অ্যাকিলিসের রক্ত টগবগ করে ফুটছে। যুদ্ধ কৌশলেও হেক্টর অ্যাকিলিসের সমকক্ষ নন। তাঁর প্রতিরোধ ভেঙে পড়ল।
হেক্টরের দেহ টেনে নিয়ে যাচ্ছেন অ্যাকিলিস
অ্যাকিলিসের হাতে নিহত হলেন ট্রয়ের রাজপুত্র হেক্টর। তারপর অ্যাকিলিস, বীরশ্রেষ্ঠ অ্যাকিলিস, অতি মানবের সুউচ্চ শিখর থেকে নেমে এলেন সাধারণের সমভূমিতে। মৃত হেক্টরের পা একটি দড়ির এক প্রান্ত দিয়ে বেঁধে অন্য প্রান্তটি শক্ত করে বাঁধলেন তার রথের সাথে। তারপর দ্রুত বেগে চালিয়ে দিলেন রথ গ্রিক শিবিরের উদ্দেশে। রক্তে ভেজা রণক্ষেত্রের অসমান জমির উপর দিয়ে টেনে নিয়ে চললেন প্রিয়বন্ধুঘাতী হেক্টরের শব দেহ। উল্লসিত গ্রিকরা প্যাট্রোক্লাসের অন্ত্যেষ্টি উদযাপন করলো বিভিন্ন ক্রীড়া কসরতের মধ্যে দিয়ে। এরপর টানা ন’দিন প্যাট্রোক্লাসের চিতার চারপাশ প্রদক্ষিণ করল অ্যাকিলিসের রথ হেক্টরের শবদেহ টানতে টানতে। প্রিয় বন্ধুর হত্যাকারীর এই চরম লাঞ্ছনা অবশেষে শান্ত করল অ্যাকিলিসের প্রজ্জ্বলন্ত প্রতিশোধস্পৃহাকে। অবশেষে দেবতারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন যে একটি নিয়ম সিদ্ধ অন্ত্যেষ্টি হেক্টরের প্রাপ্য। জিউস দেবতাদের বার্তাবাহক হার্মিসকে প্রিয়ামের কাছে পাঠালেন। হার্মিস প্রিয়ামকে নিয়ে গেলেন গ্রিক শিবিরে। হেক্টেরের মৃতদেহ তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার কাতর মিনতিতে ভেঙে পড়লেন প্রিয়াম। অ্যাকিলিসকে তাঁর স্বর্গগত পিতা পেলেউসের কথা মনে করিয়ে দিলেন। আর্দ্র হল অ্যাকিলিসের হৃদয়। রক্তাক্ত ধূলিধূসরিত হেক্টরের শবদেহ পরিষ্কার করিয়ে নতুন বস্ত্রে আচ্ছাদিত করে তুলে দিলেন প্রিয়ামের রথে। দু'পক্ষই একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি স্বীকার করে নিল। অবশেষে বীরের অন্ত্যেষ্টি লাভ করলেন ট্রয়ের রাজপুত্র হেক্টর। ইলিয়াড এর মূল কাহিনি এখানেই শেষ হচ্ছে।
বিজয়ী অ্যাকিলিস 

আমাদের ব্লগে প্রকাশিত আরও লেখা

 

No comments:

Post a Comment